মোবাইল ফোন আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। যখন যেখানেই যায় ফোন হাতের কাছে না থাকলে যেন মনে শান্তি থাকেনা। ইমেইল চেক থেকে ফোন করা, লেখাপড়া থেকে বিনোদন সব জায়গায় সবকিছুকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে এই মোবাইল ফোন।
তেমনি এই নিত্যদিনের সঙ্গীর সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম এন্ড্রোয়েড এসে মোবাইল ফোনের গ্রহণযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জীবনকে করেছে আরো সহজ এবং সাবলীল।
কিন্তু সেই প্রবলেম সল্ভার মেশিন ই যখন নিজেই প্রবলেম হয়ে ওঠে তখন হয় মহাবিপদ। এত এত মোবাইল এর সমস্যার মধ্যে যারা এন্ড্রোয়েড ইউজার তারা একটি বিশেষ সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকি। আর সেই সমস্যা হচ্ছে ফোন ব্রিক করা।
এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা যেমন গুগল ভেরিফিকেশন লক হয়ে যাওয়া। IMEI নাম্বার হারিয়ে যাওয়া সহ অনেক অনেক।
এত এত সব সমস্যার সমাধান কিন্তু একটাই। সেটা হচ্ছে ফোন ফ্ল্যাশ করা। এটাকে আপনি নতুন করে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল এর মতোও বলতে পারেন। সচারচর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এধরণের কাজের জন্য আমরা সার্ভিসিং সেন্টার এ যায় এবং বেশ পরিমান টাকা খরচ ও করে ফেলি।
কিন্তু যদি এই সমস্যার সমাধান নিজে নিজে ঘরে বসে করে ফেলতে পারি তাহলে কিন্তু মন্দ হয়না। তাহলে চলুন আজকের লেখাতে দেখে ফেলি কিভাবে যেকোন এন্ড্রোয়েড ফোন ফ্ল্যাশ করতে হয়।
ফোন ফ্ল্যাশ কখন করতে হয়?
ফ্ল্যাশ করার আগে জানতে তো হবে কখন করব তাইনা? চলুন দেখে নেই কখন কখন ফোন ফ্ল্যাশ করব
1. ফোন পাওয়ার অফ হয়ে অন করার সময় লোগো এসে থেমে থাকলে। ( যেটাকে ব্রিক বলা হয় )
2. রুট করা কিংবা অন্য কোন কারণে IMEI নাম্বার কাজ না করলে।
3. ফোন ডেড হয়ে গেলে
4. কাস্টম রম ইন্সটল করতে গিয়ে কোন স্টেপে থেমে গিয়ে ফোন ওপেন না হলে
এছাড়াও আরো অনেক সমস্যার সমাধান যখন করা যায়না তখন ফোন ফ্ল্যাশ করা প্রয়োজন হয়।
ফোন ফ্ল্যাশ করতে গেলে আগে থেকে কি করা প্রয়োজন?
যেহেতু ফোন ফ্ল্যাশ করলে ইউজার ডেটা সব রিমুভ হয়ে যায় তাই ভালো হয় যদি আপনি আগে থেকে আপনার ডেটা গুলো ব্যকআপ করে নেন। আমার যেমন গুগল ফটোস এ সব ইমেজ থাকে তাই ইমেজের ক্ষেত্রে ব্যাকআপ নিয়ে ভাবতে হয়না। তবে অন্য ফাইল এর জন্য যেভাবে ব্যাকআপ নিবেন
স্টেপ-১ঃ প্রথমে ফোন বন্ধ করে ফেলুন।
স্টেপ-২ঃ এখন আপনার ফোনের মডেল অনুযায়ী কী কম্বিনেশন খুঁজে নিন। সেজন্য গুগলে গিয়ে “[Phone & Model Name] recovery mood key combination” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। সেটা হতে পারে Volume Down + Power অথবা অন্য কিছু।
স্টেপ-৩ঃ এখন ৫ সেকেন্ড মতো সেই কী কম্বিনেশন চেপে ধরে রাখলে রিকোভারি ইন্টারফেস আসবে। যেমন নিচের মতো
স্টেপ-৪ঃ এখন আপনার ফোনের পাওয়ার বাটন একবার ক্লিক করলে নিচের মতো আরেকটা ইন্টারফেস আসবে।
স্টেপ-৫ঃ এখান থেকে “backup and restore” সিলেক্ট করে আপনার এসডি কার্ডে সব ডেটা ব্যাকআপ নিতে পারবেন। তবে যদি এই অপশন না থাকে তাহলে আপনি ব্যাকআপ নিতে পারবেন না।
এই তো আপনার ডেটা ব্যাকআপ নেয়ার প্রসেস। এখন আমরা ফোন ফ্ল্যাশ করব।
ফোন ফ্ল্যাশ করার জন্য যা যা লাগবে।
এবারে যেগুলো জিপ ফাইল আছে সেগুলো এক্সট্রাক্ট করে নিন।
ব্যাস আপনার সব কাজ শেষ। এখন শুধু আসল কাজ মানে ফ্ল্যাশ করা বাকি।
ফ্ল্যাশ কিভাবে করব?
স্টেপ-১ঃ প্রথমেই SP Flash Tools ফোল্ডার থেকে flash_tool.exe ওপেন করে নিচের মতো ইন্টারফেস থেকে Scatter-loading এ ক্লিক করুন।
স্টেপ-২ঃ এখন আপনি যেই মডেলের ফ্ল্যাশ ফাইল ডাউনলোড করেছেন সেটার এক্সট্রাক্ট ফোল্ডার থেকে Firmware ফোল্ডারে গিয়ে একটা টেক্সট ডকুমেন্ট থাকবে। যেটার নাম এর শেষে scatter লেখা থাকবে। এখন Scatter-loading থেকে ঐটা সিলেক্ট করে ওপেন করে নিন।
ব্যাস তাহলেই নিচের মতো স্ক্রিন হবে।
স্টেপ-৩ঃ এবারে এই ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন।
স্টেপ-৪ঃ এখন আপনার ফোন পাওয়ার অফ করে ডেটা ক্যাবল এর সাহায্যে কম্পিউটার এর সাথে লাগান এবং ভলিউম আপ বা ডাউন বাটন ক্লিক করুন।
স্টেপ-৫ঃ তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার স্ক্রিন নিচের মতো হবে এবং ফ্ল্যাশ হতে শুরু হবে।
স্টেপ-৬ঃ এখন “Download Ok” বাটন দেখালেই আপনার ফোন ডেটা ক্যাবল থেকে খুলে নিন এবং সাধারণ ভাবে পাওয়ার অন করুন।
ব্যাস সঙ্গে সঙ্গেই আপনার ফোন আগের মতো ওপেন হয়ে যাবে।
তো এই ছিল আজকের লেখা। আপনার কোন সমস্যা হলে কমেন্টে জানাবেন এবং কোন মতামত থাকলে সেটাও জানান। ধন্যবাদ।